শিক্ষার প্রসারে নালন্দা মহাবিহারের ভূমিকা | 2nd Sem History Honours CC-3 Suggestion 2023 | Calcutta University

2nd Sem History Honours CC-3 Suggestion 2023 | Calcutta University


শিক্ষার প্রসারে নালন্দা মহাবিহারের ভূমিকা | 2nd Sem History Honours CC-3 Suggestion 2023 | Calcutta University | টীকা লেখো: নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়।


নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস সমগ্র ভারতের গৌরবের ইতিহাস। ভারত তথা বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকে আনুষ্ঠানিকভাবে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে। এই বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘকাল কৃতিত্বের সঙ্গে শিক্ষাদান করেছে এবং ইতিহাসে নিজের নাম পাকা করেছে চিরকালের মত।


'নালন্দা' শব্দের অর্থ জ্ঞান বা জানার আগ্রহ। গুপ্ত সম্রাট কুমারগুপ্ত বর্তমান বিহারের নালন্দা জেলায় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন (আনুমানিক ৪২৭ খ্রি:)। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ভারত তথা এশিয়ার শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানরূপে দীর্ঘকালীন খ্যাতির করে বিরাজ করেছিল। নালন্দা ছিল একটি অবৈতনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ চলত। প্রতিটি ছাত্রকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে এখানে ভর্তি হতে হত। এরপর একাদিক্রমে ৭ থেকে ৮ বছর এখানে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করতে হতো।


নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত পনেরোটি বিষয়ে পড়াশুনা করানো হতো। যার মধ্যে অন্যতম ছিল বেদ, বৌদ্ধ-দর্শন, ব্যাকরণ, নীতিশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন প্রভৃতি। প্রায় সবগুলি বিষয়ই ছাত্রদের চর্চা করতে হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ছিল সুবিশাল। এই গ্রন্থাগারের তিনটি ভাগ ছিল। যথা- রত্নরঞ্জক, রত্নদধি এবং রত্নসাগর। গ্রন্থাগারে বহু পুঁথি ও আকর গ্রন্থ থাকতো। চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং এই বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়াশোনা করেছিলেন।


চীন, তিব্বত, মধ্য এশিয়ার সহ দেশ-বিদেশের বহু ছাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসতো। হিউয়েন সাং এর বিবরণী অনুযায়ী, প্রায় ১০ হাজার ছাত্র এখানে অধ্যয়ন করতো। এছাড়া শিক্ষকদের সংখ্যা ছিল ১,৫০০ এর অধিক। বিখ্যাত সব পন্ডিতগণ এখানে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হতেন। তৎকালীন সময়ে নালন্দার অধ্যক্ষ ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি পন্ডিত শীলভদ্র।


পাল বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা দেবপালের আমলে সুমাত্রার শৈলেন্দ্র বংশীয় রাজা বালপুত্রদেব  অনুমতি নিয়ে নালন্দা একটি বৌদ্ধমঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেবপালের প্রয়াসে সেযুগে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধধর্ম ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। 

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ও শিক্ষকদের সম্পর্ক ছিল মধুর। পঠন পাঠন বিষয়ে ছাত্ররা সর্বদা শিক্ষকদের সান্নিধ্য লাভ করেছিল। সবমিলিয়ে, তৎকালীন সময়ে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি সমগ্র বিশ্বে যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল তা ভারতীয়দের কাছে অত্যন্ত গৌরবের একটি বিষয়। 



তথ্য সূত্র:

১. ভারতীয় সভ্যতার বিবর্তন | আজিজুল বিশ্বাস, মো: সরোয়ার জাহান, নারায়ণ নন্দী।

২. ইতিহাস পরিক্রমা- অধ্যাপক এস মল্লিক।

৩. ভরতবর্ষের ইতিহাস- প্রাচীন ও আদি মধ্যযুগ - গোপালচন্দ্র সিনহা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

World News

نموذج الاتصال

×