টীকা: অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি | Policy of Subsidiary Alliance
প্রবর্তন:
ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তারের লক্ষ্যে লর্ড ওয়েলেসলি ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রয়োগ করেন।
অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতির শর্ত :
অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতিতে বলা হয় যে—
১. চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাজ্যগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব কোম্পানি বহন করবে।
২. চুক্তিবদ্ধ রাজ্যগুলি নিজেদের অর্থে ইংরেজ সেনা মোতায়েন করবে এবং সেই সেনাবাহিনীর প্রধান হবেন একজন ইংরেজ সেনাপতি।
৩. কোম্পানির অনুমতি ছাড়া চুক্তিবদ্ধ রাজ্য, অন্য কোনো রাজ্যের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন বা যুদ্ধে লিপ্ত হতে পারবে না।
৪. প্রতিটি মিত্ররাজ্যে একজন করে ব্রিটিশ রেসিডেন্ট নিযুক্ত থাকবেন।
প্রয়োগ:
এই মিত্ৰতা নীতিতে প্রথম সম্মতি জ্ঞাপন করেন হায়দ্রাবাদের নিজাম ; তারপর একে একে অযোধ্যা, তাঞ্জোর, সুরাট, পুনা প্রভৃতি রাজ্য এই নীতিতে আবদ্ধ হয়।
তাৎপর্য:
১. অধীনতামূলক মিত্রতা ব্যবস্থা ছিল—ভারতে ইংরেজ সাম্রাজ্য বিস্তারের একটি সুচতুর পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনার ফাঁদে দেশীয় রাজ্যগুলিকে জড়িয়ে ইংরেজ তার সাম্রাজ্য বিস্তারের পথ প্রশস্ত করে।
২. মিত্রতাবদ্ধ রাজ্যগুলি অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ব্যাপারে ইংরেজের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়।
৩. সংশ্লিষ্ট রাজ্যের খরচে সেই রাজ্যে ইংরেজ বাহিনী মোতায়েন রেখে একদিকে কোম্পানি প্রচুর অর্থ সাশ্রয় করে, অপরদিকে ওই রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থা ভেঙে পড়ে।
৪. মিত্রতাবদ্ধ রাজ্যের দেশীয় সেনাবাহিনী ভেঙে দেওয়ার ফলে সেই বাহিনীতে কর্মর বহু সৈনিক বেকার হয়ে পড়ে।
তথ্য সূত্র:
মাধ্যমিক ইতিহাস শিক্ষক- জি.কে. পাহাড়ী।