মোগল যুগের চিত্রকলা সম্পর্কে আলোচনা করো | Painting of the Mughal period
মোগল যুগে চিত্রকলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। মোগল দরবারের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতীয় ও পারসিক রীতির সমন্বয়ে এই যুগে চিত্রকলা রচিত হয়। সৌন্দর্যের পূজারী বাবর চিত্রশিল্পের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। হুমায়ুন-এর দরবারে মীর সৈয়দ আলী ও খাজা আব্বাস নামে দু'জন চিত্রশিল্পী ছিলেন। আকবর-এর রাজত্বকালের সতেরো জন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পীর মধ্যে তেরো জনই হিন্দু ছিলেন। তিনি প্রায় একশ’জন চিত্রশিল্পীর পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তাঁদের অঙ্কিত চিত্রগুলি ফতেপুর সিক্রীর অপূর্ব সৌধগুলির শোভাবর্ধন করে। যশোবন্ত, দাসওয়ান, আবদুল সামাদ, সৈয়দ আলি, তারাচাঁদ, জগন্নাথ তাঁর আমলের কৃতী শিল্পী ছিলেন।
তাঁরা পারসিক গল্প, রামায়ণ-মহাভারত ও আরব্য উপন্যাসের কাহিনীকে চিত্রে রূপায়িত করতেন। তাঁর আমলে পর্তুগীজদের উদ্যোগে মোগল চিত্রকলাতে ইওরোপীয় রীতি প্রবর্তিত হতে থাকে। জাহাঙ্গীর-এর আমলে মোগল শিল্পরীতি আত্মনির্ভর হয়ে ওঠে এবং এসময় চিত্রশিল্পে পারসিক প্রভাব খর্ব হয়ে ভারতীয় রীতি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। আবুল হাসান, মহম্মদ নাদির, বিষেণ দাশ, কেশব, তুলসী, মনোহর ও গোবর্ধন ছিলেন এই যুগের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী। এসময় লতা, পাতা, ফুল, পশু, পাখি, মানুষের মূর্তি, যুদ্ধ, শিকারের দৃশ্য, জটায়ু-বধ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে চিত্র অঙ্কিত হতে থাকে। ঔরঙ্গজেব সর্বপ্রকার শিল্পের বিরোধী ছিলেন। তিনি সেকেন্দ্রায় আকবরের স্মৃতিসৌধের চিত্রগুলি বিনষ্ট করেন।
তথ্য সূত্র:
স্বদেশ পরিচয়-জীবন মুখোপাধ্যায়।
Tags
শিক্ষামূলক