শিক্ষাবিস্তারে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্ক | প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব | Orientalist and Westernist Debate
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভারতে শিক্ষার জন্য বছরে ১০ হাজার পাউন্ড বা এক লক্ষ টাকা ব্যয় করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দশ বছর এ সম্বন্ধে কোনোরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে এই নির্দেশকে কার্যকর করার উদ্দেশ্যে Committee of Public Instruction বা জনশিক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। এরপরই এই অর্থ কোন্ শিক্ষায় ব্যয় করা হবে তা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় যা প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্ব নামে পরিচিত।
এভাবে পরস্পর বিরোধী দুটি মতবাদের উদ্ভব হয়। প্রাচ্যবাদীদের মধ্যে ছিলেন প্রিন্সেপ, কোলব্রুক, সাদারল্যান্ড, উইলসন প্রমুখ। আর পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে ছিলেন সন্ডার্স, ডাফ, কলভিন, বার্ড প্রমুখ। প্রাচ্যবাদীরা ভারতীয় শিক্ষা প্রসারের পক্ষপাতী ছিলেন, অপরপক্ষে পাশ্চাত্যবাদীরা ছিলেন পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসারের পক্ষে।
ভারতীয়দের মধ্যে রাজা রামমোহন রায় পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের সপক্ষে অনেক যুক্তি দেখান। এভাবে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্বের উদ্ভবের ফলে ভারতীয়দের মধ্যে শিক্ষার প্রসারের ব্যাপারটি গৌণ হয়ে পড়ে।
দীর্ঘ ১২ বছর পরে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে এই দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে গভর্নর জেনারেল লর্ড বেন্টিঙ্ক ঘোষণা করেন ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষার জন্যই এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
তথ্য সূত্র:
১. ইতিহাস ও পরিবেশ- Password- এ কে এম সরিফুজ্জামান।