মেকলে মিনিট সম্পর্কে টীকা লেখো | মেকলে মিনিট কী
১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে লর্ড টমাস ব্যাবিংটন মেকলে গভর্নর জেনারেলের পরিষদে আইন সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন। গভর্নর জেনারেল বেন্টিঙ্ক মেকলেকে Commitee of Public Instruction-এর সভাপতি পদে নিযুক্ত করেন। এ সময়ে ভারতে প্রাচ্য-পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্ব প্রবল আকার ধারণ করে। এই পরিস্থিতিতে বেন্টিঙ্ক মেকলেকে এ ব্যাপারে সুপারিশ পাঠাতে বলেন। মেকলের এই সুপারিশ বা Minute-ই ‘মেকলে মিনিট’ নামে অভিহিত।
১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত তাঁর এই সুপারিশে তিনি ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রসারের ওপর জোরালো সওয়াল করেন। তাঁর মতে,
(১) ভারতীয় বিদ্যা জানা অপ্রয়োজনীয়।
(২) প্রাচ্য ভাষা ও সাহিত্য সম্পদ ইউরোপীয় ভাষা ও সাহিত্যের সম্পদের তুলনায় নিকৃষ্টতর,
অপরপক্ষে পাশ্চাত্য জ্ঞানভাণ্ডার অফুরন্ত।
(৩) এ ছাড়া মেকলে ইংরেজি শিক্ষিত একদল ভারতীয় কর্মচারী সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন যারা অল্প বেতনে কাজ করে সরকারের অনেক আর্থিক সাশ্রয় করতে পারবে। মেকলের যুক্তি ঘোরতর পাশ্চাত্যবাদী বেন্টিঙ্ক সমর্থন করে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ মার্চ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের সরকারি নীতি ঘোষণা করেন।
মেকলে মিনিট ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তন ও প্রসারে এক মাইল ফলক। এর ফলে ভারতে নবজাগরণের পথ প্রশস্ত হয়েছিল। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের সরকারি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বেন্টিঙ্কের উৎসাহে প্রতিষ্ঠিত হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ এবং বোম্বাইয়ের এলফিনস্টোন ইনস্টিটিউশন। এ ছাড়া Council of Education প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইংরেজি শিক্ষার ওপর লক্ষ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তথ্য সূত্র:
১. ইতিহাস ও পরিবেশ- Password- এ কে এম সরিফুজ্জামান।