সাহিত্যিক কালীপ্রসন্ন সিংহের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’। এই গ্রন্থে তিনি তৎকালীন কলকাতার ধনী ও মধ্যবিত্ত বাবু সমাজের উচ্ছৃঙ্খলতাকে তীব্র ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছেন।
এই গ্রন্থের বিষয়বস্তুর মধ্যে নতুনত্ব না থাকলেও বিষয় উপস্থাপনার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থ এক নতুন ধারার সৃষ্টি করেছিল। এটি হল নকশা অর্থাৎ, টুকরো টুকরো ঘটনার চিত্র অঙ্কন এবং সেই চিত্রের মধ্যে বিভিন্ন রসাত্মক মন্তব্য জুড়ে দেওয়া।
গ্রন্থটিতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের আচার-আচরণ, কার্যকলাপ, ভণ্ডামি, কপটতা, শঠতা প্রভৃতি নিয়ে তীব্র রসিকতা করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষিত যুবক, কট্টর ব্রাহ্ণ, স্থূলোদর বৈষুব বাবাজি, কেরানি, জমিদার, মাংসস্তূপ, সদৃশ প্রভৃতিদেরকে নিয়ে রঙ্গ-রসের তুফান বইয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মাহেশের রথ, চড়ক, গাজন প্রভৃতি অনুষ্ঠানের বর্ণনাতেও প্রবল হাস্যরসের সৃষ্টি করা হয়েছে।
এভাবে এই গ্রন্থে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের তথাকথিত বাবুশ্রেণি ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষদের প্রকৃত স্বরূপ ব্যঙ্গের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্য সূত্র:
১. ইতিহাস ও পরিবেশ- Password- এ কে এম সরিফুজ্জামান।