নীলদর্পণ নাটকের গুরুত্ব | Madhyamik History Suggestion
দীনবন্ধু মিত্র লিখিত ‘নীলদর্পণ’ বাংলা রচিত প্রথম নাটক যাতে রুঢ় বাস্তব চিত্রের যথার্থ প্রতিফলন ঘটেছিল। এই নাটকটি নীলচাষিদের অত্যাচারিত, মর্মন্তুদ জীবনের এক জীবন্ত দলিল হিসেবে স্বীকৃত।
ব্রিটিশ নীলকরদের অত্যাচারের যথার্থ দর্পণ হয়ে উঠেছিল ‘নীলদর্পণ' নাটকটি। নীলচাষিদের ওপর অমানুষিক অত্যাচারের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা এই নাটকটিতে পাওয়া যায়। গ্রাম্য জমিদার গোলক বসু ও তার অনুগৃহীত কয়েকটি পরিবারের ওপর নীলকর সাহেব উড-এর অত্যাচারে কীভাবে ওইসকল পরিবারগুলি বিধ্বস্ত হয়ে যায় তার একটি বিশ্বাসযোগ্য দলিল এই নাটকটি।
দীনবন্ধু মিত্র তাঁর এই নাটকটি বেনামে (নীলকর-বিষধর-দংশনকাতর-প্রজানিকর ক্ষেমঙ্করেণ কেনচিৎ পথিকেনাভি প্রণীতম্) প্রকাশ করলেও এর ইংরেজি অনুবাদ রেভারেন্ড জেমস লঙ নিজ নামে প্রকাশ করেন। এর ফলে তাঁকে জেল ও জরিমানা দুটিই ভোগ করতে হলেও এই অনুবাদ ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টে নীলচাষিদের পক্ষে সাক্ষ্যরূপে গৃহীত হয়েছিল। এর ফলে নীলকরদের অত্যাচারের কথা ব্রিটেনেও প্রচারিত হয়। স্বাভাবিকভাবে নীলকররা নীলচাষিদের প্রতি তাদের অত্যাচারের মাত্রা কমাতে বাধ্য হয়।
এভাবে ‘নীলদর্পণ’ নীলচাষিদের দুঃখমোচনে সাহায্য করেছিল যেমন— Uncle Tom's Cabin সাহায্য করেছিল আমেরিকার নিগ্রোদের দাসত্ব মোচনে। এ কারণে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘নীলদর্পণ’কে হেরিয়েট স্টো রচিত উপরোক্ত গ্রন্থটির সমমর্যাদা দান করেছেন।
তথ্য সূত্র:
১. ইতিহাস ও পরিবেশ- Password- এ কে এম সরিফুজ্জামান।