নারী শিক্ষার প্রসারে বিদ্যাসাগরের অবদান | Ishwar Chandra Vidyasagar | নারী শিক্ষার প্রসারে বিদ্যাসাগর | ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগ
শিক্ষাপ্রসারে বিশেষত নারীশিক্ষা প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আজীবন চেষ্টা করে গেছেন। নারী জাতির উন্নতি না হলে সমাজেরও উন্নতি হবে না বলে তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। নারীজাতিকে শিক্ষিত করতে পারলেই সমাজে তাদের মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত হবে এই ছিল তাঁর বিশ্বাস।
মানবতাবাদী বিদ্যাসাগর নারীদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার শপথ নিয়েছিলেন। নারীশিক্ষার বিস্তারের উদ্দেশ্য ছিল এই শপথেরই একটি অঙ্গ। সরকারি ক্ষেত্রে অনুৎসাহই বিদ্যাসাগরকে আরও দৃঢ় সঙ্কল্প হতে সাহায্য করেছিল। তিনি মনে করতেন, ভগবান সেখানেই বাস করেন যেখানে নারীরা সম্মানিত হয়।
১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ‘ক্যালকাটা ফিমেল স্কুল’ (বর্তমানে বেথুন বালিকা বিদ্যালয়) স্থাপনে বিদ্যাসাগর ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন সাহেবকে সাহায্য করেছিলেন। তিনি এই স্কুলের সম্পাদকও হয়েছিলেন। নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য তিনি বিভিন্ন স্থানে ‘নারীশিক্ষা সম্মিলনী’ স্থাপন করেছিলেন। তিনি নিজ চেষ্টায় ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।
এগুলি ছিল সবই বাংলার বিভিন্ন গ্রামে অবস্থিত (হুগলিতে ২০টি, বর্ধমানে ১১টি, মেদিনীপুরে ৩টি ও নদিয়ায় ১টি)। এই বিদ্যালয়গুলিতে মোট প্রায় ১৩০০ ছাত্রী পড়াশুনা করত। নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য তিনি রাধাকান্ত দেব, রামগোপাল ঘোষ প্রমুখর সাহায্য ও সহযোগিতাও পেয়েছিলেন।
এভাবে বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। শিক্ষা ছাড়া নারী জাতির উন্নতি ও মুক্তির দ্বিতীয় কোনো উপায় নেই, এই উপলব্ধি থেকেই বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য আত্মনিয়োগ করে গেছেন।
তথ্য সূত্র:
১. ইতিহাস ও পরিবেশ- Password- এ কে এম সরিফুজ্জামান।