অযোধ্যা কীভাবে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে | How Ayodhya Emerged As a Regional Power
বর্তমান অযোধ্যা, এলাহাবাদ ও কানপুরের একাংশ এবং মাগলযুগে অযোধ্যা ‘সুবা’ গঠিত ছিল। পারস্য থেকে আগত সাদাত খাঁ বারাণসী নিয়ে ১৭২৪-৩৯ খ্রিঃ) স্বাধীন অযোধ্যা রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মোগল রাজনীতিতে প্রাধান্য অর্জন করার পর ১৭২৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি অযোধ্যার ‘সুবাদার’ নিযুক্ত হন। তিনি অযোধ্যায় শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করেন, দক্ষ প্রশাসন গড়ে তোলেন, নতুন রাজস্বব্যবস্থা প্রবর্তন করে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করেন এবং নতুনভাবে সেনাবাহিনী সুসজ্জিত করেন।
হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে তিনি ভেদাভেদ করতেন না। বাদশা মহম্মদ শাহের আহ্বানে তাঁর পক্ষে তিনি কর্ণালের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে নাদির শাহ কর্তৃক বন্দী হন এবং আত্মহত্যা করেন। ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুর পূর্বে কার্যত তিনি স্বাধীন নৃপতিতে পরিণত হন এবং অযোধ্যায় বংশানুক্রমিক শাসনের ভিত্তি রচনা করেন। ডঃ কালীকিঙ্কর দত্ত-র মতে, তিনি ছিলেন একজন সফল সৈনিক ও বিজ্ঞ প্রশাসক।
তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ও উত্তরাধিকারী আবুল মনসুর খাঁ ‘সফদর জঙ্গ’ (১৭৩৯-১৭৫৪ খ্রিঃ) উপাধি লাভ করেন। ১৭৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি মোগল সম্রাট আহম্মদ শাহের ‘উজির’ নিযুক্ত হন এবং দিল্লীর রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন। সাদাত খাঁ ও সফদর জঙ্গ ইরানী দলের নেতা ছিলেন। তাঁদের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তুরানী দলের নেতা নিজাম-উল-মূল্ক ও তাঁর উত্তরাধিকারীরা।
সফদর জঙ্গের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সুজাউদ্দৌলা (১৭৫৪-৭৫ খ্রিঃ) অযোধ্যার সিংহাসনে বসেন। তিনি দিল্লীর নাম-সর্বস্ব বাদশা দ্বিতীয় শাহ আলমের ‘উজির’ নিযুক্ত হন এবং বাংলার নবাব মীরকাশিমের পক্ষে ইংরেজের বিরুদ্ধে বক্সারের যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তিনি ইংরেজ কোম্পানির আশ্রিত হয়ে পড়েন। একথা ঠিক যে, নবাবদের শাসনাধীনে অযোধ্যায় শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজ করত এবং এই যুগে লক্ষ্ণৌ এক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।
তথ্য সূত্র:
স্বদেশ পরিচয়-জীবন মুখোপাধ্যায়।
Tags
শিক্ষামূলক