টীকা: তাইপিং বিদ্রোহ।
ভূমিকা:
তাইপিং শব্দটির মূল অর্থ হল যথার্থ শান্তি। ব্যাপক অর্থে তাইপিং বলতে বোঝায় সামাজিক সমন্বয়। কনফুসিয়াসের দর্শনে বিশ্বাসী হুং-শিউ-চুয়ানের নেতৃত্বে তাইপিং বিদ্রোহ শুরু হয় (১৮৫০-'৬৪ খ্রি.)।
তাইপিং বিদ্রোহের কারন বা পটভূমি:
আধুনিক চিনে প্রথম গণতান্ত্রিক সংগ্রাম তাইপিং বিদ্রোহ ঘটেছিল বেশ কয়েকটি কারণে। মাঞ্জু সরকারের অপদার্থতা এবং সে সময়কার চিনের আর্থসামাজিক সংকট বিদ্রোহের পটভূমি রচনা করে। এ ছাড়াও কৃষক অসন্তোষ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, সর্বোপরি চিনের বস্ত্রশিল্পের অবনতি তাইপিং বিদ্রোহ ঘটাতে সাহায্য করে।
বিদ্রোহের সূচনা ও প্রসার:
১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে কোয়াং-সি প্রদেশে তাইপিং বিদ্রোহের সূচনা ঘটে। বিদ্রোহীরা এরপর কোয়াংসি অঞ্চল ত্যাগ করে ইয়াং সি নদীর উত্তরদিকে এগিয়ে যায়। এক বছর পরে তারা নান কিং অঞ্চল অধিকার করে।
প্রকৃতি:
১. প্রথমে বুর্জোয়ারা ও পরে কৃষকরা ছিল এই বিদ্রোহের মূল চালিকাশক্তি।
২. এই বিদ্রোহের নেতারা ছিলেন সমাজের নিম্নসম্প্রদায়ভুক্ত।
৩. বিদ্রোহীরা মাঞ্জু সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিল।
ফলাফল:
তাইপিং বিদ্রোহের ফলাফল ছিল অত্যন্ত গভীর —
১. মাঞ্চু বিদ্রোহের আদর্শ অনুসরণেই পরবর্তী সময়ে আধুনিক চিনের জন্ম হয়। এই বিদ্রোহের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন পরবর্তীকালের সান-ইয়াৎ-সেন, মাও-জে-দঙ প্রমুখ চিনের মহান নেতৃবৃন্দ।
২. এই বিদ্রোহের ফলে চিনের দীর্ঘদিনের কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে।
৩. শুধু চিনে নয়, ইউরোপেও এই বিদ্রোহের মহান আদর্শ ছড়িয়ে পড়েছিল।
তথ্য সূত্র:
ইতিহাস শিক্ষক- অষ্টম শ্রেণী | জে মুখোপাধ্যায়।