পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল | পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব | পলাশীর যুদ্ধের তাৎপর্য
ভূমিকা:
পলাশির প্রান্তরে ইংরেজের সঙ্গে যুদ্ধে (১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন) সিরাজের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার সূর্য অস্ত গিয়েছিল। সিরাজের পরাজয় তথা ইংরেজ বাহিনীর জয়ের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
পলাশির যুদ্ধের ফলাফল:
১. কোম্পানির সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা:
পলাশীর যুদ্ধে জেতার পর বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। ইংরেজ কোম্পানি এই যুদ্ধ জিতে বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা হয়ে ওঠার সুযোগ পায়।
২. ভারতীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রক:
পলাশীর যুদ্ধে জিতে কোম্পানি ভারতীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠতে শুরু করে। সিংহাসনের আড়ালে ইংরেজ কোম্পানি বাংলার প্রকৃত শাসক হয়ে ওঠে। কোম্পানি বাংলার শাসকদের হাতের পুতুলে পরিণত করে।
৩. রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংকট:
পলাশির যুদ্ধে জেতার পর ইংরেজ কোম্পানি সর্বেসর্বা হয়ে ওঠে। প্রচুর অর্থের বিনিময়ে একের পর এক নবাব কেনাবেচার খেলায় কোম্পানি মেতে ওঠে। এর ফলে বাংলা তথা ভারতের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি হয়।
৪. ব্যাবসাবাণিজ্যে কোম্পানির কর্তৃত্ব:
পলাশির যুদ্ধ জয়ের পর ইংরেজ কোম্পানি দস্তক প্রথাকে কাজে লাগিয়ে বাংলার ব্যাবসাবাণিজ্যে একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। ফলে দেশীয় ব্যাবসাবাণিজ্যের সর্বনাশ ঘটে।
৫. নতুন যুগের সূচনা:
পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজরা এদেশে ব্রিটিশ শাসনক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পায়। পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ শাসনের সূত্রে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ভাবধারার প্রসার ঘটে। ফলে ভারতের সমাজ ও সভ্যতায় নবজাগরণ ঘটে। মধ্যযুগের অবসান হয়ে আধুনিক যুগ শুরু হয়।
তথ্য সূত্র:
ইতিহাস শিক্ষক- অষ্টম শ্রেণী | জে মুখোপাধ্যায়।