আকবরের রাজপুত নীতি | মোগল সম্রাট আকবরের রাজপুত নীতি
ভূমিকা: আকবর বুঝেছিলেন যে, ভারতবর্ষের বুকে মোগল সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রাখতে হলে রণনিপুণ রাজপুতদের সাহায্য প্রয়োজন। সেইজন্য তিনি রাজপুতদের সঙ্গে শত্রুতার পরিবর্তে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলে মোগল সাম্রাজ্যকে শক্তিশালী করেছিলেন।
আকবরের রাজপুত নীতির বিভিন্ন দিক:
১. বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন: আকবর অম্বররাজ বিহারীমলের কন্যা মনিবাঈকে বিবাহ করেন। তিনি পরবর্তী সময়ে বিকানির ও জয়পুরের রাজকন্যাদের সঙ্গে পরিণয়ে আবদ্ধ হন। এ ছাড়াও তিনি নিজ পুত্র সেলিমের সঙ্গে যোধপুররাজ উদয় সিংহের কন্যা যোধাবাঈয়ের বিবাহ দেন, অবশ্য এবিষয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে।
২. উচ্চ রাজপদে নিয়োগ: আকবর মোগল প্রশাসনিক এবং সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন উচ্চপদগুলিতে রাজপুতদের নিয়োগ করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল রাজপুতদের উপযুক্ত মর্যাদা দিয়ে তাদের আনুগত্য ও সহযোগিতা লাভ করা। মানসিংহ, টোডরমল, বীরবল প্রমুখ রাজপুত ছিলেন মোগল প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক ব্যক্তিত্ব।
৩. বিভিন্ন সুযোগসুবিধা দান:
রাজপুতদের কাছ থেকে সমর্থন লাভের জন্য আকবর তাদের বেশ কিছু সুযোগসুবিধা দান করেন। ১. আকবর হিন্দু তীর্থকর ও জিজিয়া কর তুলে দেন। ২. রাজপুত অশ্বারোহীদের ক্ষেত্রে দাগ (চিহ্নিতকরণ) ) প্রথা বন্ধ করেন। ৩. রাজপুতদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তিনি কোনোরকম হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নেন।
আকবরের রাজপুত নীতির ফলাফল: ১. আকবরের উদার রাজপুত নীতির ফলে মোগল সাম্রাজ্যের ভিত সুদৃঢ় হয়েছিল এবং এর স্থায়িত্ব বেড়েছিল। ২. যুদ্ধবিশারদ রাজপুতদের সঙ্গে মৈত্রীর ফলে মোগল সামরিক বাহিনী শক্তিশালী হয়েছিল। ৩. আকবরের রাজপুত নীতির জন্যই হিন্দু-মুসলিম ঐক্য গড়ে ওঠে, যা মোগল সাম্রাজ্যের ঐক্য ও সংহতি রক্ষায় সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র:
ইতিহাস শিক্ষক- অষ্টম শ্রেণী | জে. মুখোপাধ্যায়।
Tags
শিক্ষামূলক