নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য বিস্তারনীতি | Imperial Expansion Policy of Nepoleon


 নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য বিস্তারনীতি সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকা:

১৭৯৯ থেকে ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে ইউরোপের ইতিহাস বলতে বোঝায় ফ্রান্সের ইতিহাসকে। আবার এসময়কার ফ্রান্সের ইতিহাস বলতে বোঝায় নেপোলিয়নের কর্মময় জীবনের ইতিহাসকে। মধ্যযুগের ক্যারোলিঞ্জীয় সাম্রাজ্যের মতোই নেপোলিয়ন তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তার নীতির মাধ্যমে ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন।


নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য বিস্তার:

ইংল্যান্ড ও রাশিয়া ছাড়া ইউরোপের প্রায় সকল দেশেই কনসালরূপে (১৭৯৯ - ১৮০৪ খ্রি:) ও সম্রাটরূপে (১৮০৪ - ১৮০৭ খ্রি:) নেপোলিয়ন তার সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটান।


১. ইউরোপীয় শক্তিজোটে ভাঙন: 

১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে কনসাল হয়ে নেপোলিয়ন অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ডকে নিয়ে গড়ে ওঠা ইউরোপীয় শক্তিজোটে ভাঙন ধরান।


২. ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আধিপত্য বিস্তার: 

১৮০০ খ্রিস্টাব্দের জুনে আল্পস্ অতিক্রম করে নেপোলিয়নের ফরাসি বাহিনী ইতালিতে প্রবেশ করে। মারেংগা ও হোহেনলিন্ডনের যুদ্ধে অস্ট্রিয়াকে ফরাসিবাহিনী পরপর পরাজিত করে। যুদ্ধে জিতে রাইন নদীর বামতীরসহ বেশ কিছু অঞ্চল ও বেলজিয়ামের ওপর ফ্রান্সের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে নেপোলিয়ন হ্যানোভার ও নেপল্স অধিকার করেন।


৩. ভিয়েনা দখল: 

উলমের যুদ্ধে (১৮০৫ খ্রি., ২০ অক্টোবর) নেপোলিয়নের ফরাসি বাহিনী অস্ট্রিয়ার ৫০ হাজার সেনাকে পরাজিত করে ভিয়েনার দখল নেয়।


৪. অস্ট্রিয়া-রাশিয়া জোটের বিরুদ্ধে জয়: 

ট্রাফালগারের যুদ্ধে (১৮০৫ খ্রি.) ব্রিটিশের কাছে পরাজিত হলেও নেপোলিয়ন নতুন উদ্যম নিয়ে উলম্-এর যুদ্ধে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করেন। এরপর অস্টারলিজের যুদ্ধে (১৮০৫ খ্রি., ২ ডিসেম্বর) তিনি অস্ট্রিয়া-রাশিয়ার মিলিত জোটের বিরুদ্ধেও জয়ী হন।


৫. প্রাশিয়া ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে জয়: 

নেপোলিয়ন জেনার যুদ্ধে (১৮০৬ খ্রি.) প্রাশিয়াকে পরাজিত করেন। ফ্রিডল্যান্ডের যুদ্ধে (১৮০৭ খ্রি., জুন) নেপোলিয়নের ফরাসি বাহিনী রাশিয়াকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে। এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার নেপোলিয়নের সঙ্গে টিলজিটের সন্ধি (১৮০৭ খ্রি., ৮ জুলাই) স্বাক্ষরে বাধ্য হন।


উপসংহার: 

সমগ্র ইউরোপজুড়ে নেপোলিয়ন সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। ইতালি, জার্মানি, স্পেন, হল্যান্ড, নেপলস্ প্রভৃতি দেশে নেপোলিয়ন নিজের রাজবংশের লোকেদের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। ইতালিতে সৎ পুত্র হবজেন, জার্মানিতে জোরেম, স্পেনে ভ্রাতা জোসেফ, হল্যান্ডে ভ্রাতা লুই এবং নেপলসে ভগ্নিপতি মুরাকে শাসনভার দেন।


তথ্য সূত্র:

ইতিহাস শিক্ষক- অষ্টম শ্রেণী | জে মুখোপাধ্যায়। 





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال

×