শিল্প বিপ্লবের ফলাফল | শিল্প বিপ্লবের প্রভাব | শিল্প বিপ্লবের তাৎপর্য
ভূমিকা:
অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের ফলে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে যায়। পরবর্তী সময়ে ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিতেও এইসব পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। শিল্পবিপ্লবের সুফলের পাশাপাশি কিছু কুফলও ছিল।
শিল্পবিপ্লবের সুফল:
১. নগর সভ্যতার উন্মেষ:
শিল্পবিপ্লবের ফলে গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষ কাজের আশায় শহরে আসতে শুরু করে। শহরগুলি জনবহুল হয়ে ওঠে। ফলে নগর সভ্যতার উন্মেষ ঘটে।
২. নতুন শিল্পনগরীর উত্থান:
শিল্পবিপ্লবের পর বহু নতুন শিল্পনগরী গড়ে ওঠে। যেমন, ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের পূর্বে লন্ডনই ছিল একমাত্র জনবহুল নগরী। কিন্তু শিল্পবিপ্লবের পর ম্যাঞ্চেস্টার, লিভারপুল, বার্মিংহামসহ বহু শিল্পনগরী গড়ে ওঠে।
৩. শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি:
শিল্পবিপ্লব বিশ্বজুড়ে যন্ত্রযুগের সূচনা ঘটায়। পুরাতন কৃষিনির্ভর অর্থনীতির খোলস ছেড়ে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি জন্ম নেয়।
৪. সাম্যবাদের উদ্ভব:
শিল্পবিপ্লবের পর কলকারখানাগুলিতে শ্রমিকমালিকের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধি পায়। এই বৈষম্য থেকেই সাম্যবাদী ভাবধারার উদ্ভব ঘটে। শ্রমিকশ্রেণি নিজেদের স্বার্থে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তোলে।
শিল্পবিপ্লবের কুফল:
১. শোষক-শোষিতের উদ্ভব:
গ্রামীণ কুটির শিল্পকে ধ্বংস করে শহরে কলকারখানা গড়ে ওঠে। ফলে কুটির শিল্পে নিয়োজিত তাঁতি ও কারিগররা দিনমজুরে পরিণত হয় এবং কারখানার মালিকদের দ্বারা শোষিত হয়। এইভাবে সমাজে শোষক ও শোষিতের উদ্ভব ঘটে।
২. ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা:
শিল্পবিপ্লবের ফলে শিল্পজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এইসব পণ্য বিক্রয়ের জন্য বিদেশে বাজারের প্রয়োজন দেখা দেয়। এই প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্যেই ইংল্যান্ড, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ নিজেদের উপনিবেশের সংখ্যা বাড়াতে সচেষ্ট হয়। ফলে শিল্পায়নে অগ্রসর দেশগুলির মধ্যে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হয়।
৩. বুর্জোয়াশ্রেণির উদ্ভব:
শিল্পবিপ্লবের ফলে অভিজাত সামন্তদের জায়গায় ধনী বুর্জোয়াদের উত্থান ঘটে। সামন্তপ্রভুর পরিবর্তে থেকে বুর্জোয়ারাই শোষকশ্রেণি হয়ে ওঠে।
তথ্য সূত্র:
ইতিহাস শিক্ষক- অষ্টম শ্রেণী | জে মুখোপাধ্যায়।
Tags
শিক্ষামূলক
শিল্প বিপ্লবের প্রভাব
উত্তরমুছুন