হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের কারণ | সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসের কারণ
আনুমানিক ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ধ্বংসের কারণ নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদের অন্ত নেই।
(ক) মরুভূমিতে রূপান্তর:
অনেকে মনে করেন যে, পূর্বে সিন্ধু উপত্যকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হত এবং এই অঞ্চলটি ছিল জঙ্গলাকীর্ণ। কালক্রমে এই অঞ্চলে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে এবং এর ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাস পায় ও ভূগর্ভস্থ লবণ ওপরে উঠে এসে স্থানটিকে মরুভূমিতে পরিণত করে।
(খ) কৃষির অবনতি:
অনেকে মনে করেন যে, পোড়া ইটের ব্যাপক ব্যবহার ও অন্যান্য কারণে এখানে ব্যাপকভাবে বৃক্ষচ্ছেদন শুরু হয় এবং অঞ্চলটি বনশূন্য হয়ে পড়ে। এর ফলে বৃষ্টিপাতের অভাবে এই অঞ্চলের কৃষিকার্য বিপর্যস্ত হয়ে যায় এবং জনসাধারণ স্থানত্যাগে বাধ্য হয়।
(গ) বন্যা:
অনেকে বলেন যে, বারংবার সিন্ধুনদের বন্যার ফলে সভ্যতাটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। মহেঞ্জোদরো নগরীটি যে একাধিকবার বন্যা কবলিত হয়েছিল এবং বন্যা প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছিল সে সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই।
(ঘ) নগর কর্তৃপক্ষের অপদার্থতা:
এই সভ্যতার পতনের জন্য অনেকে আবার নগর কর্তৃপক্ষের অপদার্থতা ও নাগরিক আদর্শের অবনতির কথা বলেন। মহেঞ্জোদরোর নিচের স্তরে নগর পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ যত সুন্দর, পরের স্তরগুলিতে তা নয় । ওপরের স্তরগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে, রাস্তা দখল করে বাড়ী তৈরী হচ্ছে, নর্দমা বুজে আসছে, গলির মধ্যে ইটের পাঁজা তৈরী হচ্ছে, কিন্তু এগুলির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এইভাবে ঐ সভ্যতা ক্রমে ক্রমে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।