উজ্জ্বল-ঝকঝকে ত্বক পেতে চান? তাহলে আজ থেকেই প্রয়োগ করুন এই ৫ টি জিনিস

উজ্জ্বল-ঝকঝকে ত্বক পেতে চান? তাহলে আজ থেকেই প্রয়োগ করুন এই ৫ টি জিনিস:

আমাদের ত্বক খুবই কোমল, তাই বেশিক্ষণ রোদে থাকার ফলে ট্যানিংয়ের সমস্যা হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে ট্যানিং একটি সাধারণ ত্বকের সমস্যা। এই কারণে সৌন্দর্য হ্রাস পেতে শুরু করে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। আপনারা যদি মুখের ট্যানিং নিয়ে সমস্যায় থাকেন এবং এর প্রতিকার খুঁজছেন, তাহলে অবশ্যই এটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আজ আমরা আপনাকে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার বলছি , যার সাহায্যে আপনি ট্যানিংয়ের সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন।

শরীরে উপস্থিত মেলানিন আমাদের ত্বককে অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। কিন্তু যখন মেলানিন ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে আক্রান্ত হয় তখন তা ত্বকে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। এই কারণেও ট্যানিংয়ের সমস্যা দেখা দেয়। 

১. লেবুর রস (Lemon) : -

লেবুর রসের একটি ব্লিচিং প্রভাব রয়েছে, যা কিছু পরিমাণে ট্যানিং কমাতে পারে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে লেবুর অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। ফলে কোষের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় (কোষের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত) স্বাভাবিক নিয়মে যে ক্ষতি হওয়ার, তা অনেকটাই কম হয়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সহায়তা করে। তবে লেবুর রসমিশ্রিত প্যাক ত্বকে ব্যবহারের পর কারও কারও ত্বকে জ্বালাপোড়া হতে দেখা যায়, কারও কারও অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ও প্রদাহ হতে পারে। তাই এ ধরনের প্যাক ব্যবহার করতে চাইলেও কিছু বিষয়ে সতর্কতা আবশ্যক।

কিভাবে ব্যবহার করবেন : -

লেবুর রসমিশ্রিত প্যাক তৈরীর জন্য তাজা লেবুর রস নিন। এতে কিছুটা মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। এটি 30 মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং তারপরে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। আপনি লেবুর রসে কিছু চিনি যোগ করতে পারেন এবং এটি স্ক্রাব হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে দুই-তিন দিন ব্যবহার করলে তাড়াতাড়ি ত্বকে উজ্জ্বলতা আসবে।

২. টমেটো (Tomato) : -

সুস্থ, পরিষ্কার ও মসৃণ ত্বক পেতে ব্যবহার করতে পারেন টমেটো। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম ও ভিটামিন-C , যা ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বককে উজ্জ্বল ও চকচকে করে তোলে। টমেটোতে 'লাইসোপিন' নামক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা ত্বকের বিভিন্ন দাগ, বলিরেখা এবং শুষ্কভাব দূর করে ত্বক মসৃণ করে। 

কিভাবে ব্যবহার করবেন : - 

প্রথমেই একটি কাঁচা টমেটো নিয়ে নিন। টমেটোটির খোসা ছাড়িয়ে নিলে আরো ভালো হয়। দুই টেবিল চামচ দই এর সাথে ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া টমেটোর রসের সঙ্গে বাদাম দুধ মিশিয়ে ত্বকে লাগালে সুফল পাওয়া যায়।

৩. শসা (Cucumber) : -

শসা আমাদের ত্বককে মসৃণ, কোমল, আকর্ষণীয় ও উজ্জ্বল করে তোলে। ট্যানিং দূর করতে এবং রোদে পোড়া ত্বককে রক্ষা করতেও শসা সবচেয়ে ভালো বলে মনে করা হয়। কারণ শসার শীতল প্রভাব রয়েছে যা ত্বকের ট্যানিং কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত শসা ব্যবহারে ত্বকের কোষে পানি শূন্যতা কমে যায়। যার ফলে ত্বক থাকে সম্পুর্ণ সতেজ ও সজীব। শসার রস আমাদের ত্বকের মৃত কোষ গুলোকে সরিয়ে নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে। শসায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি থাকে, যা ত্বকের কালো দাগ, ব্রণের দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করে ত্বককে দাগমুক্ত করে তোলে। 

কিভাবে ব্যবহার করে : -

প্রথমেই, একটি শসা নিয়ে নিন। তারপরে শসাটিকে কষিয়ে তার পানি ভালো করে ঝরিয়ে নিন। তারপরে, তুলোর সাহায্যে শসার রস ত্বকে ভালোভাবে লাগান এবং শুকিয়ে যেতে দিন। শসার রসে সামান্য লেবুর রসও যোগ করতে পারেন। নিয়মিত শসার স্লাইস অথবা শসার আইস কিউব ব্যবহারে চোখের ডার্ক সার্কেল এবং কালো দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর হয়।

৪. হলুদ (Turmeric) : -

মুখের নিষ্প্রাণ বিবর্ণভাব কাটিয়ে সতেজ উজ্জ্বলতা এনে দিতে, মুখের কালো দাগছোপ হালকা করতে, ব্রণ-ফুসকুড়ি নির্মূল করার কাজে, মুখের যে কোনও প্রদাহ কমাতে হলুদের ব্যবহার বহু প্রাচীন। হলুদের প্যাক প্রদাহ কমিয়ে ত্বক শীতল রাখতে পারে। হলুদ মুখের তেলতেলেভাব কাটিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া হলুদের ক্রমাগত ব্যবহারে ট্যানিংয়ের সমস্যা কয়েক দিনের মধ্যে কমে যায়।

কিভাবে ব্যবহার করবেন : -

এক টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়ায় সামান্য বেসন অথবা চালের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এতে কিছু পরিমাণ টক দই বা দুধ ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি ত্বক ও শরীরে ব্যবহার করুন। পেস্টটি 15 থেকে 20 মিনিট রাখুন, তারপর শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি বা ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করে ত্বকের ট্যানিং কমানো যায়।

৫. আলু (Potato) : -

আলুর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ত্বকের বয়স কমিয়ে দেয়। এছাড়াও আলুতে থাকে বিভিন্ন ফাইবার, খনিজ, ভিটামিন। যা ত্বকের মধ্যে রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখে। আলু ডার্ক সার্কেল এবং চোখের কালো দাগ সারাতে ব্যবহৃত হয়। আলুর প্রাকৃতিক নিরাময়ের বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এর রস একটি ব্লিচিং এজেন্ট হিসাবে বিবেচিত হয়।

কিভাবে ব্যবহার করে :

আলু পাতলা করে কেটে নিয়ে চোখের উপর চাপা দিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এতে চোখের ফোলাভাব কমবে। সেই সঙ্গে আলু থেঁতো করে নিয়ে চোখের নীচে মলমের মতো লাগাতে পারেন। এতে ডার্ক সার্কল এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

World News

نموذج الاتصال

×