পটভূমি বা প্রেক্ষাপট বা কারণ:
প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের পর স্থির হয়েছিল যে, হায়দার আলি বা ইংরেজ উভয়পক্ষ তৃতীয় কোনো শক্তি দ্বারা আক্রান্ত হলে একে অপরকে সাহায্য করবে। কিন্তু ১৭৭১ খ্রিস্টাব্দে মারাঠারা মহীশূর আক্রমণ করে। এই অবস্থায় ইংরেজরা হায়দারকে সাহায্য করতে অস্বীকার করলে হায়দার ক্ষুব্ধ হন। এরপর মাহে ইংরেজদের দখলে গেলে মহীশূরের বাণিজ্য বিপন্ন হয় এবং কোম্পানি গুন্টুর জেলা দখল করে নিলে হায়দার অসন্তুষ্ট হন।
যুদ্ধের সূচনা:
মারাঠা কূটনীতিবিদ নানা ফড়নবিশের প্রভাবে হায়দার ইংরেজ-বিরোধী ত্রিশক্তি জোটে (মারাঠা, নিজাম, হায়দার) যোগ দিলে ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের সূচনা হয়। কিন্তু যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হায়দার হঠাৎ মারা যান (১৭৮২ খ্রি.)।
ফলাফল:
হায়দারের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র টিপু সুলতান যুদ্ধ চালিয়ে যান এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাঙ্গালোরের সন্ধি (১৭৮৪ খ্রি.) দ্বারা এই যুদ্ধের অবসান ঘটে। চুক্তি অনুযায়ী স্থির হয় যে, উভয়পক্ষ পরস্পরের অধিকৃত স্থান ফিরিয়ে দেবে এবং যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এই চুক্তিকে গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ‘অপমানজনক শান্তি’ (humiliating peace) বলে নিন্দা করেন।
মন্তব্য :
অনেকের মতে, এই যুদ্ধে মহীশূর কোনো নতুন ভূখণ্ড লাভ না করলেও ইংরেজদের বাণিজ্যিক সুযোগসুবিধার দাবি প্রত্যাখ্যান করে টিপু তাঁর দক্ষতার পরিচয় দেন। দক্ষিণ ভারতে কে রাজনৈতিক প্রাধান্য পাবে, তার নিষ্পত্তি যদিও এই যুদ্ধে হয়নি, তবে এতে ইংরেজের ক্ষমতা বৃদ্ধির আভাস পাওয়া গিয়েছিল।
তথ্য সূত্র:
মাধ্যমিক ইতিহাস শিক্ষক- জি.কে. পাহাড়ী।