নাদির শাহের ভারত আক্রমণ | নাদির শাহের ভারত অভিযান | নাদির শাহের ভারত অভিযানের কারণ | নাদির শাহের ভারত অভিযানের প্রেক্ষাপট
ভূমিকা:
১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে নাদির শাহের ভারত আক্রমণ ও লুণ্ঠনের ফলে মোগল সাম্রাজ্যের পতন ত্বরান্বিত হয়। এইসময় ভারতে মোগল সাম্রাজ্য সংকটগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মূলত লুঠপাট চালাতেই নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করেন।
১. মহম্মদ শাহের ব্যর্থতা:
দিল্লির শাসক মহম্মদ শাহ্, নাদির শাহকে বাধা দেওয়ার জন্য অগ্রসর হলেও শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হন। পুরাতন অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার, আধুনিক রণকৌশল ও দক্ষ সেনাপতির অভাব তাঁর ব্যর্থতা ডেকে আনে। নাদির শাহের আক্রমণে ভারতে মোগল সাম্রাজ্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
২. আর্থিক সংকট:
নাদির শাহের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মহম্মদ শাহ্ এক সন্ধি স্বাক্ষর করেন। এই সন্ধির শর্তানুযায়ী মহম্মদ শাহ্, নাদির শাহ্কে ৫৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেন। এতে মোগল সাম্রাজ্যের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
৩. নাদির শাহের দিল্লি লুণ্ঠন:
যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে নাদির শাহ্ দিল্লিতে প্রবেশ করেন। এ সময়ে গুজরাতে নাদির শাহের মৃত্যু হয়েছে—এই মিথ্যা প্রচারে উৎসাহী হয়ে দিল্লিবাসী নাদিরের সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালিয়ে ৯০০ সেনাকে হত্যা করে। এই ঘটনায় নাদির ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর সেনাবাহিনীকে দিল্লি ধ্বংসের আদেশ দেন। সাত ঘণ্টা ধরে নাদিরের সেনাবাহিনী দিল্লি নগরীতে নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড ও লুটপাট চালায়। এতে দিল্লি নগরী প্রায় শ্মশানে পরিণত হয়। রাজধানীর এহেন পরিণতিতে মোগল সাম্রাজ্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
৪. সম্পদ লুঠ:
নাদির শাহ দিল্লি ত্যাগ করার সময় সঙ্গে নিয়ে যান ৭০ কোটি মুদ্রা, অজস্র মণিমানিক্য, আসবাবপত্র, পোশাক-পরিচ্ছদ, দাস-দাসী, ময়ূর সিংহাসন, কোহিনূর মণিসহ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী। তিনি মোগল সাম্রাজ্যের এইসব সম্পদ লুঠ করে মোগল অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দিয়ে যান।
তথ্য সূত্র:
ইতিহাস শিক্ষক- অষ্টম শ্রেণী | জে মুখোপাধ্যায়।