রক্তাক্ত রবিবার বলতে কি বোঝ | রক্তাক্ত রবিবার কি | Bloody Sunday
প্রেক্ষাপট:
রাশিয়ার পেট্রোগ্রাড শহরে রশদের একটি দল ধর্মঘট শুরু করে। তারা তাদের দাবিগুলি জারকে জানানোর প্রাসাদে গেলে রক্ষীরা তাদের ওপর নৃশংসভাবে গুলি চালায়। ফলে বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়। ইতিহাসের এই লজ্জাজনক ঘটনা ‘রক্তাক্ত রবিবার’ (১৯০৫ খ্রি., ৯ জানুয়ারি) নামে পরিচিত।
পটভূমি :
রুশ-জাপান যুদ্ধে রুশবাহিনীর পরাজয় ঘটলে রাশিয়ায় জারের সামরিক দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই যুদ্ধের কারণে আর্থিক দিক থেকেও রাশিয়ার প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর ফলে দেশবাসীর দুঃখ-দুর্দশা বেড়ে যায়। এই অবস্থায় ফাদার গ্যাপোঁর নেতৃত্বে প্রায় ৬ হাজার কারখানা শ্রমিকের একটি দল জার দ্বিতীয় নিকোলাসের সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রাসাদে পৌঁছোয়। ধর্মঘটি শ্রমিকরা তাদের কাজের নির্দিষ্ট সময়, বেতনবৃদ্ধি ইত্যাদি বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে জারের কাছে একটি আবেদনপত্র পেশ করে। কিন্তু হঠাৎ জারের নির্দেশে তাঁর রক্ষীবাহিনী ধর্মঘটিদের ওপর গুলি চালালে কয়েকশো মানুষ হতাহত হয়।
প্রতিক্রিয়া :
এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সারা সোভিয়েত রাশিয়া জুড়েই। জারের সেনাবাহিনীতেও এই ঘটনার গভীর প্রভাব পড়ে। এই হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা করে কৃষ্ণসাগরে ‘পোটেমকিন’ নামক যুদ্ধজাহাজে রুশ নাবিকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
ফলাফল :
১. রক্তাক্ত রবিবার হত্যাকাণ্ডের ফলে দেশের সর্বত্র প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও হরতালের ঝড় বয়ে যায়।
২. পেট্রোগ্রাডসহ বিভিন্ন শহরে শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকে। রাশিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও শুরু হয় কৃষক বিদ্রোহ।
৩. রাশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে সন্ত্রাসবাদী হত্যালীলা শুরু হয়।
তথ্য সূত্র- ইতিহাস শিক্ষক (জে মুখোপাধ্যায়)।